স্বল্প বাজেটে মার্কেটিং করার কয়েকটি ধাপ
স্বল্প বাজেটে মার্কেটিং করার কয়েকটি ধাপ:
শফিক সাহেব একজন ছোট খাট ব্যবসায়ী। সম্প্রতি তিনি জেনেছেন মার্কেটিং মানেই টাকা ঢালা। অর্থাৎ যত বেশি টাকা খরচ করা যায় তত বেশি মার্কেটিং করা যায়! কিন্তু এই জিনিসটি পুরোপুরি ভাবে সত্যি নয়। এমন অনেক উপায় আছে যে গুলোতে মার্কেটিং করার মাধ্যমে সঠিক লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আর এর পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার লক্ষ্যমাত্রার উপর।
তবে চলুন, দেরি না করে স্বল্প বাজেটে মার্কেটিং করার কয়েকটি ধাপ জেনে নেওয়া যাক। যাতে করে এই ধাপ গুলো আপনিও অনুসরণ করে নিজের ব্যবসায়িক এমনকি ব্যক্তিগত কাজেও লাগাতে পারেন।
সোশ্যালমিডিয়া মার্কেটিং
সোশ্যালমিডিয়া অর্থাৎ ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব ব্যবহার করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এমনকি হিসেব করে দেখলে দেখা যাবে দিনের বেশির ভাগ সময় আমি আপনি ফেসবুকেই কাটিয়ে দেই। তাই খুবই স্বল্প বাজেটে মার্কেটিং করার ধাপ হিসেবে এই সোশ্যালমিডিয়া গুলোকে কাজে লাগাতে পারেন। তাতে নিজের সময় কাটানোর পাশা পাশি অল্প স্বল্প মার্কেটিং সেরে ফেললে ক্ষতি কী?
ফেসবুক মার্কেটিং :
ফেসবুক মার্কেটিং হতে পারে আপনার স্বল্প বাজেটে মার্কেটিং এর আদর্শ একটি উপায়। ফেসবুকে পেজ কিংবা গ্রুপ খুলেই শুরু করতে পারেন নিজের ব্যবসায়ের মার্কেটিং। শুরু করতে পারেন নিজের পরিচিত বন্ধু বান্ধবদের এড করার মাধ্যমে। আর ধীরে ধীরে সেটা বাড়াতে পারবেন।
এছাড়াও ফেসবুকের নিত্যনতুন কিছু ফিচার আছে। যেমন ফেসবুক লাইভ, মার্কেট-প্লেস ইত্যাদি। এগুলোর সাহায্যেও আপনি আপনার পণ্য বা সেবা সংক্রান্ত মার্কেটিং করতে পারেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে ফেসবুকের এই কাজ গুলো করা যাবে একদম ফ্রী তে। অর্থাৎ পেজ, গ্রুপ, লাইভ এসব করতে আপনার ফোনের ইন্টারনেট খরচ ছাড়া আর কোন খরচই নেই। তবে পেজ বুস্টিং অর্থাৎ পেইড মার্কেটিংও করতে পারেন। তবে সেটাও স্বল্প খরচেই। ৫/১০ ডলার খরচ করে সুনির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্স সিলেক্ট করেও সেরে ফেলতে পারেন স্বল্প বাজেটের মার্কেটিং।
ইউটিউব মার্কেটিং :
স্বল্প বাজেটে মার্কেটিং করার আরেকটি ধাপ গুলো ইউটিউব মার্কেটিং। এখানেও নিজের ব্যবসায়িক একাউন্ট খুলে মার্কেটিং করতে পারেন অনায়াসে। ফেসবুকের মত এখানেও কিছু ফ্রী সুযোগ সুবিধা আছে। যে গুলো দিয়ে অনায়াসে কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। একই সাথে থাকছে পেইড মার্কেটিং। অল্প কিছু বাজেটের মাধ্যমে ভিড়িয়ো আকারে মার্কেটিং পৌঁছে দিতে পারেন আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছে। এখানে সব থেকে বড় সুবিধা হলো আপনার ক্রেতারা আপনার পণ্যের খুঁটি নাটি ভিড়িয়ো আকারে দেখতে পাবে। তাতে করে তারা খুব ভাল করে জেনে বুঝে নিতে পারবে নতুন কোন পণ্য বা সেবা কিভাবে ব্যবহার করতে হয়।
ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং :
ফেসবুক ইউটিউবের মত ইনস্টাগ্রামও এখন টিনেজারদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। এখানেও ছোট ছোট স্টোরি কিংবা ছবি শেয়ার করার মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারেন বিনা খরচে। অন্য গুলোর মত এখানেও নির্দিষ্ট বাজেটে টার্গেট অডিয়েন্স রিচ করা যায় সহজে। এতে করে মার্কেটিং এর খরচ অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব
কার্যকরী ভাবে।
গুগোল মার্কেটিং
সোশ্যালমিডিয়ার পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিন গুগোলেও করতে পারেন মার্কেটিং। এখানে বেশিরভাগই পেইড। অর্থাৎ বাজেট অনুসারে সার্চ ইঞ্জিন, এসইও, এসইএম ইত্যাদি করতে পারেন। তবে গুগোলে ফ্রিতে ব্লগ খুলে সোশ্যালমিডিয়ার মত করেও মার্কেটিং করতে পারেন।
এছাড়াও গুগোল ম্যাপে নিজের ব্যবসায়িক দোকানের ঠিকানা যোগ করে আপনার স্টোরের লোকেশন চিহ্নিত করে দিতে পারেন। তাতে করে যে কেউ আপনাকে ম্যাপে খুঁজে নিতে পারবে। আর একত্রিত ভাবে এই সকল কাজ আপনার ওয়েবসাইটের এসইও এর জন্য সহায়ক হবে।
ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং
অনলাইন বা সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিংও কিন্তু হারিয়ে যায়নি। বরং এখনো ট্র্যাডিশনালমার্কেটিং এর কিছু কৌশল অবলম্বন করে কার্যকর ভাবে মার্কেটিং করা যায়।
ওয়ার্ড অফ মাউথ মার্কেটিং
নিত্যদিনের বাজার করতে যে দোকানদার সুন্দর ভাবে কথা বলে। অথবা নিয়মিত বাজার করেন বলে কিছু টাকা ছাড় দেয়। অথবা ওজনে কম দেয়না বরং ভাল জিনিসটা দেওয়ার চেষ্টা করে তাদের কাছে কিন্তু আমরা প্রতিদিন যাই। অর্থাৎ তারা আমাদের ভরসার জায়গাটা নিয়ে নেয়। এমনকি বন্ধু-বান্ধব কারো কোন কিছু লাগলে সেই দোকান গুলোতেই যেতে বলি।
অথবা কোন ব্র্যান্ডের ভালো কোয়ালিটির গুণগান করি। এটাই ওয়ার্ড অফ মাউথ মার্কেটিং। অর্থাৎ আপনার ব্যবসায়িক সুনাম ছড়িয়ে দিতে পারলে আপনার ক্রেতারাই ওয়ার্ড অফ মাউথের মাধ্যমে আপনার বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করবে। এই ওয়ার্ড অফ মাউথ কখনোই টাকার বিনিময়ে পাওয়া যায়না। এটা নির্ভরযোগ্য এবং খুবই শক্তিশালী মার্কেটিং মাধ্যম।
শেষ কথা
এটা সত্যি যে মার্কেটিং এর জন্য বাজেট আপনার ১,০০০ টাকাও হতে পারে। আবার ১,০০,০০০ টাকাও হতে পারে। তবে জেনে বুঝে এবং সুচিন্তিত ভাবে মার্কেটিং এর ধাপ গুলো অনুসরণ করলে সেটা দিনশেষে আপনার বিক্রি বাড়াতে যেমন সাহায্য করবে। তেমনি বছরের পর বছর চলতে থাকলে সেটা আপনার ব্র্যান্ডিং জন্যেও কার্যকরী হয়ে উঠবে।
very informative writing. Thanks & go for good working.
এই কথা গুলো আমার কাছে খুবি ভাল লেগেছে…..
[ নিত্যদিনের বাজার করতে যে দোকানদার সুন্দর ভাবে কথা বলে। অথবা নিয়মিত বাজার করেন বলে কিছু টাকা ছাড় দেয়। অথবা ওজনে কম দেয়না বরং ভাল জিনিসটা দেওয়ার চেষ্টা করে তাদের কাছে কিন্তু আমরা প্রতিদিন যাই। অর্থাৎ তারা আমাদের ভরসার জায়গাটা নিয়ে নেয়। এমনকি বন্ধু-বান্ধব কারো কোন কিছু লাগলে সেই দোকান গুলোতেই যেতে বলি। ]
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের প্রয়োজন বুঝে এমন ভাল কিছু লিখতে পারব, আপ আপনাদের সহযোগিতা এবং অনুপ্রেরণা আমাদের একান্ত কাম্য।
Today, this